‘আমরা তিনজন একসঙ্গে তার প্রেমে পড়েছিলাম : আমি, অসিত আর হিতাংশু; ঢাকায় পুরানা পল্টনে, উনিশ-শো সাতাশে। সেই ঢাকা, সেই পুরানা পল্টন, সেই মেঘে-ঢাকা সকাল!’কয়েকটা লাইনেই মনটা কেমন নস্টালজিক হয়ে ওঠে, তাই না? যেন একসঙ্গে ভীড় করে আসতে থাকে ধোঁয়া ধোঁয়া সেই পুরনো প্রেমের ছবি। বুদ্ধদেব বসুর ‘আমরা তিনজন’ গল্পের এই শুরুটা শুধু বাংলা সাহিত্যের-ই নয়, ঢাকার ইতিহাসেরও অংশ হয়ে গেছে। ঢাকার প্রেম বললেই তাই চোখের সামনে ভেসে ওঠে পুরনো পল্টনের সেই তিন প্রেমিকের ছবি। সবাই একসঙ্গে প্রেমে পড়েছিল অন্তরা নামের সেই মেয়ের, শেষ পর্যন্ত তিন জনই হয়ে গিয়েছিলেন ট্র্যাজেডির নায়ক। পুরনো পলটনের বাতাসে তাই আজও ভেসে বেড়ায় তিন প্রেমিকের দীর্ঘশ্বাস।ঢাকা শহরটা যত পুরনো, প্রেমও ঠিক ততটাই। বুদ্ধদেব বসুর গল্পের তিন প্রেমিক পলটনের মাঠে শুয়ে হারিয়ে যেত ঘোরে। তবে ঢাকার বাতাসে প্রেম কিন্তু নীরবে না, সরবেই এসেছিল অনেক আগে থেকে। মোঘল আমলে ঢাকার নারীরা ছিল কঠোর অন্তঃপুরবাসিনী, পর্দাপ্রথার ভেদ করে পরপুরুষের সাথে চোখাচোখির বেশি কিছুর সুযোগ তখন কমই ছিল। বিশেষ করে অভিজাত মুসলিম পরিবারের হলে তো কথাই নেই। কিন্তু প্রেম কি অতশত বাধা মানে? ঘোড়ার গাড়ির আওয়াজও তাই প্রেমিক-প্রেমিকাদের ফিসফিসানি ঠিক ঢাকতে পারত না। এর মধ্যেই এক দুইটি প্রেমের গল্প হয়ে থাকে অমর। সেটাও অবশ্য সফল প্রেম নয়, ইউসুফ-জুলেখা বা লায়লী-মজনুর মতো ব্যর্থ প্রেম। আপনি জেনে একটু অবাক হতে পারেন, ঢাকার সবচেয়ে ট্রেডমার্ক খাবার যেটা, সেই বাখরখানির নামই এসেছে একটা কিংবদন্তি ট্র্যাজেডি থেকে।গল্পটা একটু খোলাসা করে বলা যাক। ঢাকার প্রথম স্বাধীন নবাব ছিলেন মুর্শিদ কুলি খাঁ। তাঁরই দত্তক ছেলে আগা বাকের। বলা যায় বাবার একেবারে যোগ্য উত্তরসূরি ছিলেন বাকের। যেমন মেধায়, তেমনি অস্ত্রবিদ্যায়ও তুখোড়। কিন্তু সেই বাকের প্রেমে পড়ে গেল রাজধানী মুর্শিদাবাদের নর্তকী খনি বেগমের। এই খনি বেগমের সৌন্দর্যের খ্যাতি সেই সময় ছড়িয়ে পড়েছিল পুরো ঢাকায়। নবাবপুত্র বাকেরও তাই মজে গেল সেই রূপসীর প্রেমে। কিন্তু এই গল্পে এবার হাজির হলো একজন ভিলেন। বউজিরপুত্র নগর কোতোয়াল জয়নাল খানও ছিল খনি বেগমের প্রেমপ্রার্থী। খনি বেগমকে প্রেমও নিবেদন করে সে-ও। কিন্তু খনি বেগম তো আগেই মন দিয়ে বসেছে আরেকজনকে। জয়নাল খানকে তাই বিফল হতে হলো। কিন্তু ব্যর্থ হয়ে জয়নাল ভাবে, খনি বেগমকে একটা কঠিন শাস্তি দিতে হবে। ঘটনাচক্রে সেটা জানাজানি হয়ে যায়, আগা বাকের জয়নালকে হুমকি দেয় দেখে নেওয়ার। সেই সময়ে যা হতো, এরপর ঠিক হলো দুজনের তলোয়ারযুদ্ধ হবে। ওদিকে ঘটতে থাকে আরেক কাহিনি। জয়নালের দুই বন্ধু উজিরকে মিথ্যা খবর দেয় যে, বাকের জয়নালকে হত্যা করে লাশ গুম করেছে। উজির নবাবের কাছে গিয়ে বলে, ‘হুজুর আমার ছেলে হত্যার বিচারের বিচারের ভার আপনার কাছেই দিলাম’। নবাব মুর্শিদ কুলী খাঁ ছিলেন কঠিন নীতিপরায়ণ মানুষ। ছেলেকে অপরাধের শাস্তি দেন তিনি, বাকেরকে ঢুকিয়ে দেওয়া হয় বাঘের খাঁচায়। কিন্তু বাঘের আর সাধ্য কি তার সঙ্গে এঁটে ওঠার? বাকেরের হাতে মারা যায় বাঘ। এর মধ্যে ফাঁস হয়ে যায় জয়নালের মারা যাওয়ার মিথ্যা খবর। চতুর জয়নাল ওদিকে খনিকে অপহরণ করে নিয়ে যায় দক্ষিণ বঙ্গে। বাকেরও খবর পেয়ে যান, সত্যিকারের প্রেমিকের মতোই খনিকে উদ্ধার করতে পিছু নেয় জয়নালের। এরপর আবার টক্কর লাগে দুজনের। কুচক্রী জয়নাল খান বাকেরকে হত্যার চেষ্টা করতে গেল। কিন্তু উজির এবার নিজে এসে পড়েন। বাকেরকে বাঁচিয়ে নিজের ছেলেকে হত্যা করেন তলোয়ারের আঘাতে। তবে তার আগে জয়নাল তলোয়ার ঢুকিয়ে দেয় খনি বেগমের বুকে, বাকেরের কোলেই ঢলে পড়ে খনি। বাকেরগঞ্জে সমাধিস্থ করা হয় খনি বেগমকে। আর বাকের সবকিছু ছেড়ে রয়ে গেল প্রিয়তমার সমাধির কাছে – দক্ষিণ বঙ্গে। বাকেরের নামেই বাকলা-চন্দ্রদ্বীপ বা এখন যেটা পটুয়াখালি-বরিশাল, সেই অঞ্চলের নাম হয় বাকেরগঞ্জ। আর বাকের আর খনির নাম থেকেই এসেছে বিখ্যাত বাকরখনি, যেটা দিয়ে নাস্তা না হলে পুরনো ঢাকার লোক দের চলেই না।এই প্রেম নিয়ে অবশ্য কোনো সিনেমা হয়নি। তবে গল্পটা কিন্তু সিনেমা হওয়ার মতোই। ঢাকার প্রেম নিয়ে অবশ্য লেখা হয়েছে অনেক গল্প-উপন্যাস-কবিতা। বুদ্ধদেব বসুর কথা তো বলা হয়েছে, প্রেমেন্দ্র মিত্রের বিখ্যাত হয়তো গল্পেও এসেছে ঢাকার রহস্যময় প্রেম। এই প্রেমের শুরু ধোলাইখালের ওপর নির্মিত লোহারপুলে। কোনো এক দুর্যোগের রাতে লোহারপুল পাড়ি দিচ্ছিলেন প্রেমেন্দ্র মিত্র। সেই অন্ধকার রাতে দেখলেন শুনশান ব্রিজের ওপর এক পুরুষ ও এক নারী দুই দিক থেকে অতিক্রম করলো পরস্পরকে। প্রেমেন্দ্র মিত্র তাদের মধ্যে দেখতে পেয়েছিলেন অন্যরকম একট প্রেম। সেই থেকেই লেখা হলো তার বিখ্যাত গল্প ‘হয়তো’।প্রেমেন্দ্র মিত্রের সেই ত্রিশের দশকের ঢাকার প্রেমের সঙ্গে আজকের ঢাকাকে অবশ্য মেলানো যাবে না একদমই। ত্রিশ, চল্লিশ বা পঞ্চাশের দশকেও ঢাকা ছিল অনেকটাই শান্ত, নিথর। তখনও ঢাকার অত তাড়াতাড়ি কোথাও যাওয়ার তাড়া ছিল না। হ্যাঁ, সেই সময়ে প্রেম করার মতো নিরিবিলি জায়গার অভাব ছিল না, তবে কাজটা সহজ ছিল না মোটেই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের পাশাপাশি ছাত্রীদের সংখ্যা তখন বাড়তে শুরু করেছে। স্বাভাবিকভাবেই যৌবনধর্মের অমোঘ টানে শুরু হয়েছে মন দেওয়া নেওয়ার পালা। বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক লুকোচুরি করে সেই সুযোগ কিছুটা মিলত বটে, তবে যোগাযোগ করতেও কত হ্যাপা। মোবাইল তো দূরে থাক, তখনকার দিনে ল্যান্ড ফোনও ছিল না ঠিকঠাক। চিঠি লেখা ছাড়া তো গতি নেই প্রেমিক-প্রেমিকাদের, তবে সেই চিঠি দেওয়াটাই হতো মুশকিল। প্রক্টরের মাধ্যমে দিতে হতো চিঠি। একবার তো প্রক্টর যাতে বুঝতে না পারেন, সেজন্য আরবী বিভাগের এক ছাত্রী প্রেমিককে চিঠিই লিখল আরবীতে। সেই চিঠির মর্ম প্রেমিক কীভাবে উদঘাটন করেছিল, সেটা অবশ্য একটা প্রশ্ন।তবে ঢাকায় তখন আজকের মতো প্রকাশ্যে প্রেমিক-প্রেমিকারা এতোটা ঘুরে বেড়াত না। লোকলজ্জার ভয়টাই ছিল বড়, সেজন্য একসঙ্গে রিকশা ঘরে ঘোরার ক্ষেত্রেও কত সতর্কতা! বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা ক্যাম্পাসের ভেতরেই প্রেম করত, কখনো যেত রমনা পার্কে। একটা সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভাবন ছিল এখনকার ঢাকা মেডিকেলের ইমার্জেন্সি গেটে, তার পাশেই ছিল খেলার মাঠ। একটু নিরিবিলিতে প্রেম করার জন্য সেটা ছিল মোক্ষম একটা জায়গা। ষাট বা সত্তরের দশকে এসে আরেকটু শিথিল হয় সামাজিক বিধিনিষেধ, রাস্তাঘাটে প্রেমিক-প্রেমিকাদের আনাগোনাও একটু একটু করে বাড়তে থাকে। তখন অবশ্য হবু প্রেমিকদের অন্যতম গন্তব্যস্থল ছিল নিউ মার্কেট, তন্বী যুবতীরা সেখানেই ভীড় করত বেশি। এখনকার মতো তখন কথা বলার এত সাহস তো যুবকদের ছিল না। কাউকে দেখে পছন্দ হয়ে গেলে কোনোভাবে তার পিছু নিয়ে বাড়ি পর্যন্ত দেখে আসা- এটাই ছিল অনেক বড় সাহসের কাজ। কাজটা অবশ্য এখনকার যুগের মতো এতোটা কঠিন ছিল না। তখন গাড়িঘোড়া ছিল রাস্তায় কম, ট্রাফিক জ্যামেরও এতো বালাই ছিল না।এরপর আশি বা নব্বই দশকে এসেও প্রেমের গল্প খুব একটা বদলায়নি। তখন ল্যান্ডফোন মোটামুটি সুলভ হতে শুরু করেছে, সেটা ছিল যোগাযোগের ভালো একটা উপায়। বাসার কড়া নজরদাড়ি এড়িয়ে সেই ল্যান্ডফোনে চলত প্রেমিক-প্রেমিকাদের ফোনালাপ, তবে ধরা হয়ে গেলে একেবারে ফোনে তালা। আর কার্ডফোনের চলও শুরু হয়েছে, সেখানে ঢুকে পয়সা ফেলেও কথা বলা যেত। ওদিকে প্রেমপত্রের মাধ্যমে ভাব বিনিময় তো চলতই। সিনেমার গানের সীমা পেরিয়ে তখন ব্যান্ড সংগীত জনপ্রিয় হতে শুরু করেছে, প্রেমিক-প্রেমিকারাও হতে শুরু করেছেন আরেকটু সাহসী।ঢাকার সেই প্রেম হুট করে বদলে যেতে শুরু করে মোবাইল-যুগে এসে। সেই প্রথম ল্যান্ডফোনের বাধা পেরিয়ে প্রেমিক-প্রেমিকারা হতে শুরু করেছে আরও কাছের। এর মধ্যে ঢাকা আরও বেশি ঠাসবুনোটের হয়েছে, অন্তরঙ্গ আলাপের জন্য জায়গা খুঁজে পাওয়া হয়েছে আরও কঠিন। মুঠোফোন আরও বেশি মানুষের নাগালে এসেছে, কিন্তু কমেছে অভিসারের জায়গা। ভদ্রস্থ প্রেমের জন্য গজাতে শুরু করেছে রেস্টুরেন্ট, প্রেমিক-প্রেমিকারা সেখানেই করতে শুরু করেছে ভীড়। এর মধ্যে মোবাইল যুগ হয়ে গেছে স্মার্ট-ফোন আর ফেসবুকের যুগ। চেকইন আর সেলফি প্রেমকে করেছে আরও বেশি ভার্চুয়াল। কিন্তু এক চিলতে জায়গা খুঁজতে প্রেমিক-প্রেমিকাদের হতে হয়েছে জেরবার। পয়লা ফাল্গুন থেকে ভালোবাসা দিবসে সেই টিএসসিই হয়ে পড়ে লোকে লোকারণ্য। ফেব্রুয়ারিতে অবশ্য আরেকটু সময় কাটানোর সুযোগ মেলে প্রেমিক-প্রেমিকাদের, এটা যে বইমেলার মাস! বইপ্রেমী যুগলরা একসঙ্গে নতুন বইয়ের ঘ্রাণ নেন প্রাণভরে, পরস্পরকে তারা দেন কবিতার বই।শত ব্যস্ততা, শত নাগরিক ক্লেশে চিড়েচ্যাপ্টা হয়ে যাওয়া এই মনোরম মেট্রোপলিসের বাতাসেও ভেসে বেড়ায় প্রেম। হোক সেটা ফুচকার দোকানে, রিকশার হুডের নিচে বা রেস্টুরেস্টের চেকিনে। প্রতিদিন ঢাকার আয়ু একটু করে বাড়ে, আর বাড়ে তার প্রেমের বয়সও। ঢাকার প্রেম তাই হয়তো বুড়িয়ে যায়, ফুরিয়ে যায় না।
কিবোর্ডবাজের খেরোখাতা
Sunday, February 27, 2022
ঢাকার প্রেম
Wednesday, April 21, 2021
অন্ধের স্পর্শের মতো চলে গেলেন শঙ্খ ঘোষ
সব কবিদের গদ্য সুন্দর হয় না। কেউ কেউ আছেন যাদের দুই হাতে একসঙ্গে বাজে কবিতা আর গদ্যের যুগলবন্দি। শঙ্খ ঘোষের গদ্যই সত্যিকার অর্থে পড়েছিলাম আগে। বইয়ের ঘর বইতে পড়েছিলাম একটা বইয়ের দুই মলাটে ভিড় করে থাকা গল্প। কী মোলায়েম সেই ভাষা! এরপর পড়লাম অন্ধের স্পর্শের মতো। এরপর আরও নানা কিছু। বইয়ের ঘর থেকে কয়েকটা ছত্র এখানে তুলে দিচ্ছি।
"আবারও কি তবে হারিয়ে ফেললাম বইখানা?
আগেও হারিয়েছিলাম একবার। সেটা টের পাবার সঙ্গে সঙ্গে মনে হয়েছিল অল্প বয়সের একটা অংশই যেন হারাল আমার জীবন থেকে। সেটা যে বইয়ের ভিতরকার কোন মহিমার জন্য, তা কিন্তু নয়। সেটা তার চারপাশে ঘিরে থাকা অনুষঙ্গের জন্য। ভিতরের কথাগুলি ছাড়াও আরো কত সম্পদ থাকে বইয়ের, থাকে কত ব্যক্তিগত মুহূর্তের স্তবকে স্তবকে খুলে যাওয়া স্মৃতি, কোনো একখানা বই হাতে নিলে যেন কোনো নিজস্ব জীবনাংশই জেগে ওঠে তাই। কোনো বইয়েরই কোনো বিকল্প-বই হতে পারে না, একই সংস্করণের একই মুদ্রণের হলেও তা হয় না। প্রত্যেকটা বই-ই জেগে থাকে তার একলা গরিমায়, একক ইতিহাসে।"
শঙ্খ ঘোষ একটা সময় ডুব দিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথকে। রবীন্দ্রসংগীত নিয়ে তার বই ‘এ আমির আবরণ” যারা পড়েছেন, তারা কিছুটা অনুভব করতে পারবেন কতটা মগ্ন ছিলেন তিনি রবীন্দ্রচৈতন্যে। সেটা ব্যাখ্যা করে বোঝানো মুশকিল, এবারও কয়েকটা লাইন তুলে দেওয়ার লোভ সামলাতে পারলাম না।
‘যে মুখে তিনি আমার দিকে আসিতেছেন আমি যদি সেই মুখেই চলিতে থাকি তবে তাঁর কাছ থেকে কেবল সরিতে থাকিব, আমি ঠিক উলটা মুখে চলিলে তবেই তো মিলন হইবে।
তিনি রূপ ভালোবাসেন, তাই কেবলই রূপের দিকে নামিয়া আসিতেছেন। আমরা তো শুধু রূপ লইয়া বাঁচি না, আমাদের তাই অরূপের দিকে ছুটিতে হয়। তিনি মুক্ত, তাই তাঁর লীলা বন্ধনে, আমরা বদ্ধ, সেইজন্য আমাদের আনন্দ মুক্তিতে। এ কথাটা বুঝি না বলিয়াই আমাদের যত দুঃখ।’
শঙ্খ ঘোষের কবিতা নিয়ে খুব বেশি বলবার কিছু নেই। মুখ ঢেকে যায় বিজ্ঞাপনের মতো মুখে মুখে ছড়িয়ে যাওয়া কবিতা ছাড়াও তার অনেক কবিতাই পরানের গহীনে নিয়ে কড়া নাড়ে। শঙ্খ ঘোষের শ্রেষ্ঠ কবিতার প্রায় সবগুলোই তাই হৃদয়ের অনেক কাছাকাছি। এর মধ্যে আমার সবচেয়ে প্রিয় কবিতাটা দিয়েই কবির প্রয়াণদিবসে এই বিদায়ী তর্পণ ...
যে দূর দূরের নয়, যে দূর কাছের থেকে দূর
যে আকাশ ভরে আছে আকাশের ভিতর বিধুর
যে স্বর স্বরের চেয়ে চেয়ে শরীরের আরও কাছাকাছি
আমার ভিতরে আমি ক্ষীণ তার প্রান্ত ছুঁয়ে আছি।
যে তুমি তোমারও চেয়ে ছড়িয়ে রয়েছ অবিনাশ
যে তুমি পাথরে ফুল সে তুমি সজলে ভাসো শিলা
কালের আহত কাল তুলে নিয়ে যায় তাঁর শাঁস
এতদিন সয়ে থেকে তার পরে ছিঁড়ে যায় শিলা
ঘুমের ভেতর ঘুমে পড়ে থাকে ডানাভাঙা হাঁস
পাটল প্রবাহে তবু অবিকল জাগে এক টিলা।
আমি সেই স্তবে ভরা নীরব পলের পাশাপাশি
কিছুই না এর প্রেমে অবলীন হয়ে আছি।
Tuesday, December 29, 2020
টোটা রায় চৌধুরী: পটে আঁকা ফেলুদা
খুব সম্ভবত বাঙালি দর্শকের ফেলুদা নিয়ে সারাজীবনের একটা অতৃপ্তি ছিল, পারফেক্ট ফেলুদা সেভাবে পাওয়া হয়নি কখনো। সেই সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় থেকে সব্যসাচী চক্রবর্তী থেকে কখনো সখনো করা আবীর চট্টোপাধ্যায় থেকে সবাইকে নিয়ে হয়তো খুঁতখুঁতানি থেকে গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সত্যজিৎ যেমন ছবি এঁকেছিলেন, ঠিক তেমন একটা ফেলুদা বোধ হয় পাওয়া গেল। সৃজিতের ফেলুদা ফেরতের প্রথম পর্ব ছিন্নমস্তার অভিশাপ দেখতে গিয়ে এরকমই মনে হচ্ছিল।
টোটা রায় চৌধুরী লোকটার মুখের আদল ঠিক যেন সত্যজিতের আঁকা সেই ফেলুদার ছাপ। প্রথম দেখাতেই টোটাকে অনেকখানি মনে ধরে যাবে আপনার। সেই চৌকোনো মুখ, দোহারা গঠনের সঙ্গে অন্তর্ভেদী চোখ। সঙ্গে উচ্চতাটাও মোটামুটি ঠিকঠাক। এ তো গেল বাইরের দেখায়, অভিনয়ে টোটা কত পাবেন? এখানে হয়তো দুই রকম মত থাকতে পারেন। কেউ বলতে পারেন, টোটা বড্ড বেশি আড়ষ্ট, একটু যেন বেশিই গম্ভীর। এখানে টোটার হয়তো উন্নতির সুযোগ থাকলেও থাকতে পারে। তবে আমার মতো কারও মনে হতে পারে, টোটার এই মাপা অভিনয়টা ফেলুদার সাথে ভালোমতোই মানিয়েছে। ফেলুদাকে এরকমই খানিকটা স্বল্পবাক, চুপচাপ হিসেবে কল্পনা করেছিলাম। অবশ্যই রসবোধ ছিল, সেই ড্রাই হিউমার এখনো ঠিক টোটা হয়তো পুরোপুরি আত্মস্থ করতে পারেননি (যেটার মূল পরিচয় পাওয়া যেত জটায়ুকে টিপ্পনী কাটার মাধ্যমে)। তবে সব মিলে টোটা আপাতত উতরে গেছেন।
এখানেই সারাজীবনের একটা আপসোস ছিল। সৌমিত্রের অভিনয় নিয়ে বলার কিছু নেই, সোনার কেল্লা বা জয়বাবা ফেলুনাথের সেই সৌমিত্রই আমাদের চিরচেনা ফেলুদা। কিন্তু ঠিক ফেলুদাসুলভ মুখের আদল বা ব্যক্তিত্বটা তার সেভাবে ছিল কি না সেটা তর্কসাপেক্ষ। সত্যজিত নিজেও যতটা না ফেলুদা, তার চেয়ে অনেক বেশি খুঁতখুঁতে ছিলেন জটায়ুকে নিয়ে। সেজন্য সন্তোষ দত্ত মারা যাওয়ার পর আর ফেলুদাই করলেন না। সৌমিত্রর ফেলুদা যাত্রা তাই দুইটি ছবিতেই শেষ (যদিও ঘুরঘুটিয়ার ঘটনা আর গোলকধাম রহস্য নামে দুইটি টিভি চলচ্চিত্র করেছিলেন, কিন্তু সেগুলোর লিংক খুঁজে পেলাম না)।
সত্যিকার অর্থে ছেলেবেলায় আমরা সব্যসাচীকে দেখেই বড় হয়েছি। টিভিতে আমার প্রথম দেখা ফেলুদা গোঁসাইপুর সরগরমের সেই সব্যসাচী আর সেই জটায়ুতে রবি ঘোষ। সব্যসাচীর উচ্চতা, গড়ন সবকিছুই ঠিকঠাক। ড্রাই হিউমারটাও দারুণ, কিন্তু বড্ড দেরিতে ফেলুদা করা শুরু করেছিলেন। আর মুখাবয়বটাও ঠিক ফেলুদার সাথে মানানসই মনে হয়নি। একটা সময় আর কাউকে না পেয়ে বুড়ো বয়সেই তাকে ধরেবেঁধে ফেলুদা বানিয়ে দেওয়া হয়েছে। আবির আর পরমব্রতরা যে ফেলুদা করেছেন, সেগুলো আসলে কমবেশি ছেলেমানুষিই হয়েছে। শার্লক নিয়ে যেমন বেনেডিক্ট কাম্বারব্যাচ আইকন হয়ে উঠেছে, বাঙালি সেভাবে আর ফেলুদাকে পায়নি।
টোটা সেই আইকন হতে পারবেন কি না, সেটা এখনো অনেক দূরের পথ। সেজন্য সৃজিতেরও প্রচুর খাটাখাটনি করতে হবে। প্রথম চেষ্টায় তার নির্দেশনা উতরে যাওয়ার মতো, কিন্তু আবহসংগীত আর চরিত্র নির্বাচনে আরও উন্নতির সুযোগ আছে। অনেক জায়গায় আবহ সংগীত খাপছাড়া মনে হয়েছে। ফেলুদার মজা এই, ছোটখাট চরিত্রগুলোর অভিনয়গুণে প্লট আরও জমে উঠে। সেদিক দিয়ে নীলিমা দেবির মত কারও অভিনয় আরও ভালো হতে পারত। তবে জটায়ুতে অনির্বাণ আর নতুন তোপসে অ্যাভারেজ ছিলেন, তাদেরও সুযোগ আছে উন্নতি করার।
তবে শুধু টোটার জন্যই ফেলুদা ফেরতের পরের অধ্যায়ের জন্য এখন তৃষিত অপেক্ষা থাকবে।
Sunday, November 15, 2020
'জানি তুমি অনন্য'
সৌমিত্র কেন অনন্য?
উত্তরটা এক দিক দিয়ে সহজ। চারমিনার ঠোঁটে প্রদোষ চন্দ্র মিত্র থেকে
কেতাদুরস্ত, চোস্ত অসীম; ধূর্ত চতুর ময়ুরবাহন থেকে বিভূতিভূষণের
মানসপুত্র অপু; এদিকে আদর্শবাদী শিক্ষক উদয়ন পন্ডিত থেকে ওদিকে প্রেমাতুর অমল; এমন
ভার্সেটাইল কজন বাঙালি অভিনেতাই বা ছিলেন? উত্তম কুমার সব সময় বাঙালির
স্মার্টনেসের ধ্রুবক, সেদিক থেকে চিন্তা করলেও সৌমিত্র অনন্ত চরিত্রের বৈচিত্র্যে
পাল্লা দিতে পারবেন উত্তমের সঙ্গে। কিন্তু সৌমিত্র ঠিক এই কারণেই কি অনন্য?
ব্যাপারটা আরেকটু তলিয়ে দেখা যেতে পারে।
সৌমিত্রের ক্যারিয়ারের শুরুটাই এমন একজনের হাত ধরে, যার জন্য বাকিদের
অনেকটা আলাদা হয়ে গেছেন ওখানেই। সত্যজিৎ রায়ের চোখ ছিল আর দশজন বাঙালির চেয়ে
আলাদা, মননে আর মেধায় ছিলেন ক্ষণজন্মাদের একজন। জহুরির চোখে হীরে কদর করতে জানতেন,
সৌমিত্রকে দেখে বুঝেছিলেন এই ছেলেকে দিয়ে হবে। সৌমিত্র নিজেও অনেক কাঠখড় পুড়িয়েই
অভিনয়ে এসেছিলেন। নিজের শীর্ণকায় চেহারা নিয়ে ছেলেবেলা থেকে একসময় হীনমন্যতায়
ভুগতেন। মেধা আর পরিশ্রম দিয়ে সেই বাধা পার করেছেন, যদিও অনায়াসেই পরে তাকে
সুদর্শন বলা যেত। তবে বাঙালির মেয়েদের স্বপ্নের পুরুষ উত্তমকুমার হতে না পারলেও সৌমিত্র
নিজের জায়গাটা দাঁড় করিয়েছেন সহজাত অভিনয়-মেধার জন্য। যে মেধার জন্য অপু হয়ে যখন
তিনি ইন্টারভিউ দিতে যান, তখন প্রশ্নকর্তার উত্তর শুনে জবুথবু হয়ে উত্তর দিতে গিয়ে
স্ক্রিপ্টের বাইরে বাড়তি একটা ঢোকও দেন। আর সেই ইম্প্রোভাইজেশন দেখে দূর থেকে
মুচকি হাসিতে সত্যজিত তারিফ করে ওঠেন। চরিত্রের ভেতর ঢুকে যাওয়ার এই ব্যাপারটা ছিল
মজ্জাগত। অনেক অভিনেতারই সেটা থাকে অবশ্য। তবে সৌমিত্রের মধ্যে একটু বেশিই ছিল।
সাধারণত বিখ্যাত গল্প থেকে ছবি করলে সেই প্রত্যাশা পূরণ হয় না সবসময়।
পথের পাঁচালি বা অপরাজিতের বই হিসেবে যে আসন, রূপালী পর্দায় সেটা দেখানো ছিল আরো বড়
চ্যালেঞ্জ। সেই চ্যালেঞ্জ নেওয়া সত্যজিতের মতো জিনিয়াসের পক্ষেই ছিল সম্ভব। তবে
অপুর চরিত্রটার জন্য সত্যজিতের এমন একজনের দরকার ছিল, যেন বাঙালির কল্পনার পটে
আঁকা ছবিটাই যেন চলে আসে সিনেমার ফ্রেমে। সেখানে সৌমিত্র একেবারে লেটার মার্ক পেয়ে
পাশ। অপুর যৌবন থেকে মধ্যবয়স অবদি সংগ্রামটা সৌমিত্রের ক্যারিয়ারের বড় একটা
পরীক্ষা ছিল, সেটার জন্য কম ঘাম ঝরাতে হয়নি তাকে।
তবে চ্যালেঞ্জের মুখে সত্যজিত তাকে দাঁড় করিয়েছেন বার বারই। অটোমেটিক
কাস্ট হয়ে ওঠার পরেও গুপি গাইন বাঘা বায়েনে প্রিয় চরিত্র তাকে দেননি, আবার ঠিক
কল্পনার ফেলুদা না হওয়ার পরও সত্যজিৎ আস্থা রেখেছিলেন সৌমিত্রের ওপর। অরণ্যের
দিনরাত্রির অসীম বা চারুলতার অমলের সঙ্গে মানিয়ে নিতে দৃশ্যত সৌমিত্রকে খুব একটা
কষ্ট করতে হয়নি, শহুরে মধ্যবিত্তের সেই চরিত্রের সঙ্গে মিশে গেছেন সহজেই। কিন্তু
অশনী সংকেতের গঙ্গাচরণের গ্রাম্য চরিত্রের জন্য তাকে বেশ পরিশ্রম করতে হয়েছিল। আবার
অভিযানের নরসিং চরিত্রটাও বেশ আন্ডাররেটেড, খ্যাপাটে ড্রাইভারের ভূমিকায় সৌমিত্র
যেন অনেকটাই পালটে ফেলেছিলেন নিজের খোলনলচে। ঝিন্দের বন্দির ধুরন্ধর
ময়ুরবাহনের ভূমিকায়ও যে নিজেকে এভাবে বদলে ফেলবেন, সেটা কে ভেবেছিল?
সৌমিত্র আসলে এ কারণেই অনন্য। নিজের একটা অন্তর্ভেদী আর অনুসন্ধিৎসু
মন তো ছিলই, সেটা আরও বেশি ধারালো হয়েছে সত্যজিতের সঙ্গে এসে। প্রিয় মানিকদাকে
নিয়ে আস্ত একটা বই-ই লিখে ফেলেছেন, সত্যজিতও এই বুদ্ধিমান মেধাবী যুবককে দারুণ
পছন্দ করতেন। তবে তার বাইরে তপন সিংহ থেকে বাণিজ্যিক পরিচালকদের সঙ্গেও কাজ করেছেন
অক্লেশে। কিন্তু সবখানেই নিজের মেধার একটা ছাপ রেখে যেতেন। মধ্যবিত্ত বাঙালির যে
গর্ব করার জায়গা, সেই শিক্ষা আর প্রজ্ঞার দ্যুতি ছিল তার চোখেমুখে আর চলনেবলনে।
বাঙালির স্বপ্নের পুরুষ না হোন, তাই হতে পেরেছেন পাশের বাড়ির মেধাবী ছেলেটি। আর এখানেই
ছিলেন আর দশজন অভিনেতার চেয়ে ব্যতিক্রম। সেজন্যই প্রিয় সহঅভিনেত্রীর নাম জানতে
চাওয়ার সময় ভেবে বলেছিলেন, ‘আমি জানি সবাই সুচিত্রা বা অপর্ণার নামই হয়তো আশা করবেন,
তবে আমি বলব অভিযানে ওয়াহিদা রেহমানের কথা। ওরকম একটা চরিত্র কজন করতে পারে?’ এমন উত্তরই বা কজন অভিনেতা দিতে পারেন?
সৌমিত্র তাই এক ও অদ্বিতীয়, চে গুয়েভারার উত্তমের পাশে বাঙালির ফিদেল
কাস্ত্রো।
Monday, July 6, 2020
এনিও মরিকনি: বুনো পশ্চিমে ভেসে বেড়াত যার সুর
একটা সময় সোনার সন্ধানে সেখানে পঙ্গপালের মতো ছুটে এসেছিল অনেকে, এরপর থেকেই সেই উষর অঞ্চলে নাগরিক সভ্যতা গড়ে উঠতে শুরু করে। তবে গানফাইটের সব বর্ণনা বাস্তব নয় পুরোপুরি, কথায় কথায় হয়তো ডুয়েলও হতো না। কিন্তু ছেলেবেলায় যে পশ্চিম কল্পনা করেছিলাম, একটু বড় হয়ে তার অনেকটুকুর দেখা পেলাম পর্দায়। সেটার মূল কুশীলব পাঞ্চো পরা একজন চৌকোনো মুখের আমেরিকান, ক্লিন্ট ইস্টউড যার নাম। আর পর্দার পেছনে ছিলেন দুজন। হলিউডে বুনো পশ্চিমের মূল রূপকার পরিচালক সার্জিও লিওন আর সুরের ভুবনটা ভরিয়ে তুলতেন এনিও মরিকনি। লিওন চলে গেছেন আগেই, আজ নব্বই পেরিয়ে চলে গেলেন মরিকনি।
ওয়েস্টার্ন ছবি মানে শুধু বন্যতা বা গানফাইট নয়, এখানে মিশে আছে উদাসী কাউবয়ের অ্যাপালুসার পিঠে মাইলের পর মাইল পাড়ি দেওয়ার রোমান্টিকতা। এখানে আছে দুষ্টের দমন আর শিষ্টের পালনের অদ্ভুত একটা ছবি। এই কোমল-কঠোরে মেশানো প্রকৃতির মূল সুরটা খুব ভালোভাবে ধরতে পেরেছিলেন মরিকনি। এজন্যই যত বার ডলার ট্রিলজির সুর বেজে ওঠে, ততবার কেমন যেন আনমনা হয়ে যাই। পরে জানতে পেরেছি, এই সিনেমাগুলো করতে পুরো অর্কেস্ট্রা করার মতো বাজেটই ছিল না মরিকনির। সেজন্য কিছুটা ‘ইম্প্রোভাইজ’ করতে হয়েছিল, বন্দুকের গুলি, চাবুকের শব্দ, বাঁশি এসব ব্যবহার করতে হয়েছিল। ১৯৬৪ সালে আ ফিস্টফুল অব ডলারসের শুরুর পর এই ধারাটাই পরিচিত হয়ে যায় স্প্যাগেটি ওয়েস্টার্ন নামে। এরপর থেকে লিওন আর মরিকনি এই ধারার ছবির ক্ষেত্রে হয়ে ওঠেন হরিহর আত্মা। মরিকনি সম্ভবত তার সেরা কাজগুলোর একটি করেছেন ‘ওন্স আপন আ টাইম ইন দ্য ওয়েস্টে’। এই ছবির উত্থান-পতনটা একটু জটিল ছিল, মরিকনি সেই দ্বন্দ্বটা ধরতে পেরেছিলেন দারুণভাবে।
Sunday, June 7, 2020
স্মৃতিমেদুর শাহাদুজ্জামানের সঙ্গে বিহবল কয়েকটি ঘন্টা
Sunday, May 24, 2020
দ্বিতীয় মৃত্যুর আগে
ঢাকার প্রেম
‘আমরা তিনজন একসঙ্গে তার প্রেমে পড়েছিলাম : আমি , অসিত আর হিতাংশু ; ঢাকায় পুরানা পল্টনে , উনিশ-শো সাতাশে। সেই ঢাকা , সেই পুরানা পল্টন , সেই ...
-
‘আমরা তিনজন একসঙ্গে তার প্রেমে পড়েছিলাম : আমি , অসিত আর হিতাংশু ; ঢাকায় পুরানা পল্টনে , উনিশ-শো সাতাশে। সেই ঢাকা , সেই পুরানা পল্টন , সেই ...
-
খুব সম্ভবত বাঙালি দর্শকের ফেলুদা নিয়ে সারাজীবনের একটা অতৃপ্তি ছিল, পারফেক্ট ফেলুদা সেভাবে পাওয়া হয়নি কখনো। সেই সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় থেকে স...
-
সব কবিদের গদ্য সুন্দর হয় না। কেউ কেউ আছেন যাদের দুই হাতে একসঙ্গে বাজে কবিতা আর গদ্যের যুগলবন্দি। শঙ্খ ঘোষের গদ্যই সত্যিকার অর্থে পড়েছিলাম আ...